হেফাজতে ইসলামের নেতা জুনাইদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকের দিকে ইঙ্গিত করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আলেম নামধারী কিছু ব্যক্তি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেদের ‘আখের গোছানো’তে লিপ্ত।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বায়তুল মুকাররম মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘ধর্মের নামে অরাজকতা, তথাকথিত ধর্মীয় নেতাদের ধর্মহীনতা এবং শান্তির ধর্ম ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রকৃত আলেমদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্য বয়ান করেন। আজকে কিছু আলেম নামধারী ব্যক্তিবর্গ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছানোতে লিপ্ত।
“আপনারা দেখেছেন বাবুনগরী-মামুনুল হকের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি বেরিয়ে এসেছে। কোন দেশে দোকান আছে, কয়টা লরি আছে, এগুলো বেরিয়ে এসেছে।“
মাদ্রাসা দেখিয়ে বিভিন্ন দেশ এবং দেশের বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে থেকে তারা চাঁদা সংগ্রহ করে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ আরো বলেন, “সেই টাকা দিয়ে পরস্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে যায় ফুর্তি করার জন্য। এমনকি জাকাত-ফিতরার টাকাও তারা আরাম আয়েশের জন্য নিজেদের অ্যাকাউন্টে নিয়ে গেছে। এরা কি আলেম! এরা আলেম নামধারী কলঙ্ক।”
হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রীদের জন্য দেয়া পুলিশের সুরক্ষা ছাড়া আমার পেছনে কোনো গাড়ি থাকে না। আর মামুনুল হক সাহেব যখন বের হত, সামনে পাঁচটা পেছনে পাঁচটা, এমনকি বিভিন্ন সময়ে আরো বেশিও গাড়ি থাকত।
“এই টাকা কিসের টাকা? তার কি কোনো ইন্ডাস্ট্রি আছে, তার কি কোনো ব্যবসা আছে! ব্যবসা হচ্ছে মাদ্রাসা দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। যারা এই সমস্ত কাজ করছে তারা হচ্ছে ইসলামের শত্রু।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “ইসলামের কথা বলে যারা মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়, ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দেয়, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, এরা ইসলামের শত্রু।
“যারা ধরা পড়েছে তারা ছাড়াও ইসলামের শত্রু আরো আছে, তাদেরকেও চিহ্নিত করে বর্জন করা ও তাদের মুখোশ উন্মোচন করা প্রয়োজন। এই মুখোশ উন্মোচনের কাজটি করার জন্য আলেমদের প্রতি আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।”
তিনি এসময় ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের নীতির এক চুলও পরিবর্তন আমাদের সরকার করে নাই।”
আলোচনা সভায় ইসলামের সেবায় সরকারের বহুমুখী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আলেমদের গ্রেপ্তার করেনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে যারা অপরাজনৈতিক চিন্তা থেকে অঘটন ঘটানোর অপতৎপরতায় লিপ্ত জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করেছে।
“এরাই আমরা আলেমদেরকে গ্রেপ্তার করেছি- এই কথা বিভিন্ন আঙ্গিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর চেষ্টা করে। আমি মনে করি তারা বাঙালির জাতি, ইসলাম ও দেশের শত্রু।”
ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য মুফতি মাওলানা কাফিল উদ্দিন সরকার সালেহী, ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির মহাসচিব শাইখুল হাদিস, মাওলানা মুফতি শাহাদাত হোসাইন সভায় বক্তব্য দেন