মাদারীপুরের শিবচরে ত্রিভুজ প্রেমের বলি হলেন বিসিএস পরীক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন ইমন। পরিকল্পিতভাবে তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
ঈদের দিন আড়িয়ালখাঁ নদের পাড়ে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে ইমনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কথিত প্রেমিকা লাবনী আক্তার (২০) ও তার সহযোগী মেহেদী ফরাজীকে (১৯) গ্রেফতার করেছে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে জানা গেছে, গত ১৫ মে রাতে শিবচর উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাঁচামারা গ্রামের মরা আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে একটি পাটক্ষেতের পাশে গলাকাটা অবস্থায় এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন, এসআই সঞ্জীব জোয়াদ্দার, দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি শরীফ আ. রশিদসহ পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহত ইসমাইল হোসেন ইমন নিলখী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরকামারকান্দি গ্রামের সেকেন কাজীর ছেলে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। ১৬ মে নিহত ইমনের ভাই কাজী রেজাউল বাদী হয়ে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলার গোয়েন্দা পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় কথিত প্রেমিকা লাবনী আক্তার ও তার সহযোগী মেহেদী ফরাজীকে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার সবকিছু তুলে ধরেন পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
নিহত ইমনের মামা মোকসেদ মোল্লা ঘটনার পর বলেছিলেন- ‘আমার ভাগ্নের সঙ্গে জামাল নামের পাশের বাড়ির এক ছেলে ছিল। ওই ছেলে দাবি করে, আমার ভাগ্নে তার প্রেমিকার সঙ্গে এই প্রথম দেখা করতে গিয়েছিল। ওই মেয়েটি তাকে (জামাল) স্পিড (পানীয়) খেতে দিয়ে ওরা আলাদা কথা বলতে যায়। এরপর সে (ইমন) অচেতন হয়ে যায়। আর কিছু জানে না বলে জানায় জামাল। ওর (জামালের) কথা বিশ্বাস করা কঠিন। আমার ভাগ্নে খুবই মেধাবী ছাত্র এবং সে বিসিএস পরীক্ষার্থী ছিল।
মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আল মামুন বলেন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, ইমনের হাতঘড়ি ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। মামলাটি জেলার গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার ঘোষ তদন্ত করছেন। শিগগিরই আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, এক বছর আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইমনের সঙ্গে পরিচয় হয় লাবনীর। একপর্যায়ে তাদের মাঝে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। অন্তরঙ্গ ছবি তোলেন দুজনে। পরে লাবনীর সঙ্গে পরিচয় হয় কামরুজ্জামান কামরুল নামে এক যুবকের।
তিনি বলেন, এরপর থেকে ইমনের মোবাইল ফোনে থাকা সব ছবি মুছে ফেলতে বলে লাবনী। ছবি মুছে না ফেলার কারণেই ঈদের দিন বিকালে ক্লোল্ড ড্রিংকসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ইমনকে হত্যা করা হয়। ত্রিভুজ প্রেমের কারণেই হত্যা করা হয় ইমনকে।
London Bangla A Force for the community…
