ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিমের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন তার বিরুদ্ধে অসাচারণের অভিযোগ এনে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এর আগে গত ৮ই মে একটি অনলাইন ওয়েবিনারে শিক্ষা মন্ত্রী দিপু মনির উপস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীনকে উদ্দেশ্য করে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম বলেন, ‘জামাল এতো রাতে অফিসে থাকো কেনো! পাগল টাগল নাকি?’। এ ঘটনায় জামাল উদ্দীন তার মানহানি হয়েছে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন করে তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চেয়েছেন।
আবেদনে তিনি লিখেন, গত ৮ মে ২০২১ রাত ৯টা থেকে আনুমানিক সোয়া ১১টায় Anthropublic, Micro governance Research Initiative ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘ভিকটিম দোষারপের সংস্কৃতি’ (The Culture of Victim Blaming) শীর্ষক ওয়েবিনারে আমি অংশগ্রহণ করি। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে ই-মেইলে এই ওয়েবিনারে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
উক্ত ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল, দেশের বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ শতাধিক শিক্ষক, গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি শিক্ষামন্ত্রীর সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের শেষ মুহুর্তে অন্যতম কো-কোস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ভদ্রবেশে আমার উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে অযাচিত ও অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করেন, এক পর্যায়ে তিনি আমাকে ‘পাগল টাগল নাকি’ বলে চরম মানহানিকর নোংরা ভাষা প্রয়োগ করেন যা অংশগ্রহণকারী সবাই দেখতে ও শুনতে পায়, এবং তা ভিডিও আকারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
আমি মনে করি তার এ ধরনের মন্তব্য হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও তা তিনি আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্য করেছেন যা তার পাবলিক নুইসেন্স ও প্রফেশনাল মিস কনডাক্ট (Public Nuisance & Professional Miss Conduct) অসদাচরণের বহিঃপ্রকশ।
আবেদনে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় তথা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে এতে আমার মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। ডিজিটাল পাবলিক প্লেস বা উন্মুক্ত স্থানে হাজার হাজার মানুষের সামনে তার এই ধরনের হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্রমূলক শিষ্টাচার বহির্ভূত মানহানিকর মন্দ ও নোংরা বক্তব্য সামাজিকভাবে আমার চরম ক্ষতি সাধন করেছে, যার আর্থিক মূল্য অপরিমেয় এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে আমার মতো একজন সিনিয়র সহকর্মী শিক্ষকের প্রতি সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম কর্তৃক এই ধরনের পাবলিক
নুইসেন্স ও প্রফেশনাল মিস কনডাক্ট (Public Nuisance & Professional Miss Conduct) অসদাচরণের তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড মো আখতারুজ্জামান বলেন, আমি দুপুর দুইটায় অফিস থেকে চলে এসেছি। তাই আবেদনটি হাতে পাইনি।
অধ্যাপক জামাল উদ্দীনের লিখিত আবেদনটি উপাচার্যের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা), উপ উপাচার্য (প্রশাসন), রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টর বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাদেকা হালিম বলেন, এটা আমি একেবারে স্নেহভরে বলেছি। ওই প্রোগ্রামটি একদম রাত সাড়ে ১১টায় শেষ হয়েছে। তখন তো আমরা যে যার বাসাতে। আমি তখন দেখলাম যে ও (জামাল) অফিসে। তাই বললাম এই জামাল তুমি এতক্ষণ অফিসে এত রাত হয়ে গেছে চলে যাও। তুমি কি পাগল? তুমি এতক্ষণ অফিসে থাকো এত রাত।