ঘর বরাদ্দে স্ত্রীকে দিয়ে টাকা নিয়ে ধরা আ.লীগ নেতা
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার গৃহহীনদের ঘর বরাদ্দে টাকা নেয়ার অভিযোগে দলীয় শোকজ পেয়েছেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নু। তার স্ত্রী মেরিনা আকতারের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ করেছেন ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত মমতাজ নামের এক নারী।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক ওই নেতাকে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠিয়েছেন।
তবে অভিযুক্ত আবু দাউদ নান্নু বলছেন সামনে দলীয় কাউন্সিল ও ইউপি নির্বাচন। তাই তার জনপ্রিয়তা কমাতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সাজানো হয়েছে।
ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত ফজরের স্ত্রী মমতাজ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন, ঘর দেয়ার কথা বলে নান্নুর স্ত্রী মেরিনা আকতার তিন মাস আগে তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেন। এরপর মমতাজ লটারিতে ঘর পাওয়ার পর আবু দাউদ নান্নু তার স্ত্রীর মাধ্যমে মমতাজের কাছে আরও ৫০ হাজার টাকা চান। এতে মমতাজ অপারগতা প্রকাশ করলে ওই নেতার স্ত্রী বলেন, ৫০ হাজার টাকা না দিলে ঘরের চাবি ও ঘর দেয়া হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ বুধবার রাতে জানান, সাঁথিয়ায় প্রকৃত গৃহহীনদের মাঝে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে মুজিববর্ষে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার’ ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এমনকি অনেক অসহায় গৃহহীন প্রতিবন্ধীকে তার অফিসে ডেকে এনে তার বাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাঁথিয়ায় এই একটি জায়গায়ই একজন অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পর তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় প্যাডে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয় মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার অভিযোগ ও আর টাকা না দিলে হুমকি ধামকির বিষয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এতে দলের আদর্শ ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র ৪৭/৯ এর বিধি অনুযায়ী দলের স্বার্থ, আদর্শ, শৃংখলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি অপরাধ। তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নু বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছি কখনো কারো সাথে দুই নাম্বারি করিনি। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও দলীয় কাউন্সিল। আমার প্রতিপক্ষ আমাকে ঘায়েল করার জন্য ওই গৃহহীন নারীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিয়েছে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করলে বিষটির প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি বলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে দলের সকল নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে।