হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ডসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সংগঠনটির নায়েবে আমিরের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান। তিনি বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘’আমি নিজের অনুভূতি ও উপলব্ধি থেকে বলছি, হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. এর ইন্তেকালের পর হেফাজতে ইসলামে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। গ্রুপিং ও দলাদলি সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দল ও ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ অনুপ্রবেশ করেছে এবং তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে হেফাজতে ইসলামকে অত্যন্ত সুকৌশলে মাঠে নামানোর চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে হেফাজতে ইসলামকে তারা অনেকটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে। বিতর্কিত বহিরাগত সংগঠনের লোকজনই হেফাজতে ইসলামের নেতাদের অধিকাংশের মতামত উপেক্ষা করে হরতালের মতো কর্মসূচি পালনে বাধ্য করেছে। আগে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কার্যক্রম পরিচালিত হলেও, সম্প্রতি কিছু ব্যক্তির নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমি হেফাজতে ইসলামের ‘নায়েবে আমির’ পদ থেকে ইস্তফা প্রদান করলাম। আমার ইস্তফা প্রদানে কে বেজার হলো, কে খুশি হলো এটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমার হেফাজতে ইসলাম থেকে ইস্তফা প্রদান ইসলাম, দেশ ও জাতির অধিকতর কল্যাণের লক্ষ্যে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি বলেন, এখন থেকে আমি ও আমার সংগঠন বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসলাম ও দেশ জাতির কল্যাণে এককভাবে প্রয়োজনীয় সব কর্মসূচি গুরুত্বসহকারে পালন করে যাবে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কোনও কর্মকাণ্ডের দায় আমার ও আমার দলের ওপর বর্তাবে না।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়ে বলেন, বিগত কয়েকদিনে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হাটহাজারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরসহ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০ জন নিহত ও অসংখ্য আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে; করোনা মহামারিসহ সব গজব থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর রহমত কামনায় বিগত দিনের মতো সকল কওমী মাদ্রাসাগুলো খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি, নিরীহ আলেমদের ওপর প্রশাসনের হামলা-মামলাসহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধের অনুরোধ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।