সাহিদুর রহমান সুহেল: সত্যি কথা বলতে আমাদের জাতীয় নারী ক্রিকেট দলে যারা খেলেন তারা নিতান্ত সাধারন ঘরের মেয়ে।নারী ক্রিকেট এখনও সেই সমাজ ব্যবস্হা তৈরী হয়নি/আমরা তৈরী হয়নি যে,ঐতিহ্যবাহী ঘরের মেয়েরা ক্রিকেট খেলবে বা আমরা খেলতে দেই।এদের বেতন ভাতা নিতান্ত কম।এমনকি পুরুষ ক্রিকেট দলের বেতন-ভাতার সাথে নারী ক্রিকেট দলের পার্থক্য আকাশ-পাতাল ।কিন্তু এরা যে মা-মাটিকে ভালোবেসে দেশের হয়ে খেলতে যখন ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সফর করে তখন তারা উচ্চ জীবনের লোভকে সামলিয়ে,থেকে যাওয়ার সুযোগ থাকা সত্তেও দেশে ফিরে যায় তাদের দেশ প্রেম কিন্তু আলেচনায় আসেনা! বিদেশে নারী ক্রিকেটের পলায়ন একটির উদাহার নেই।
অথচ আমার চারিপাশ মানে বার্মিংহামে আমার দীর্ঘ একুশ বছরের জীবনে বার্মিংহাম বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা থেকে সাধারন কর্মচারী বিশাল অংশ এবং তাদের পরিবার মেয়াদ শেষে থেকে গেছেন। এমনকি বিগত কয়েকজন সহকারী হাইকমিশনার নিজে মেয়াদ শেষে চলে গেলেও তাদের পরিবার বার্মিংহামে রেখে দিয়েছ্ন।এরা কিন্তু স্বামীর পুরো মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের খরচে বিলাস বহুল এলাকায় বাসা ভাড়া সহ ইউটিলিটি বিলে জীবন-যাপন করেছেন।
আমার প্রশ্ন হলো:এক;এদের পরিবার পরবর্তীতে ব্রিটেনে থাকার জন্য ইমিগ্রেশনে কি বলে থাকতে চায়? বাংলাদেশ সরকারের নেগেটিভ কোন কথা বলে কিনা? বাংলাদেশ সরকার কি তাদের আবেদনের কারন গুলো কি তদন্ত করবে? এই দেশে লিগ্যাল পাওয়া এতো সহজ নয়।
দুই;তাদের পরিবার যখন বার্মিংহামে তখন সহকারী রাষ্ট্র দুতরা অন্যসহানে পুরো একটি বাসার ব্যয়ভার কি সরকার বহন করবে? তারা কি রাষ্ট্রকে অবহিত করেন যে,এখানে তিনি একক ভাবে বসবাস করছেন? একক ভাবে বসবাস করলে রাষ্ট্রকি পুরো ব্যয়ভার বহন করে?
তিন;যারা চাকুরির পর ফিরে যাননা,তাদের প্রতি সরকারের আইনি ব্যবস্হা কি? তাদেরকি জরিমানার ব্যবস্হা রয়েছে কিনা? এই ধরনের কাজ করলে পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা সাধারন জনগনের ন্যায় কি সমান?
চার;বার্মিংহামের বিগত কয়েকজন সহকারী হাইকমিশনারের পদোন্নতি হচ্ছে।কিভাবে এদের পদোন্নতি হচ্ছে? এদের শর্টলিষ্ট কিভাবে হয়? ফিজিক্যাল ফিট টেস্ট কিভাবে নেয়া হয়? চাকুরীর অভিজ্ঞতা কিভাবে মুল্যায়ন হয়?
রাষ্ট্রর কাজের পাশা-পাশি স্হানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির রিলেশন কেমন ছিল? বিগত কয়েকজন কমিউনিটিকে বিভক্ত করা ছাড়া কোন সফলতা নেই।রাষ্ট্রের অনেক গুরত্বপুর্ন সিদ্ধান্ত কমিউনিটির কাছে উপস্থাপনের কোন নজির নেই।সঠিক উপস্থাপনের অভাবে কমিউনিটিতে রয়েছে সরকারকে নিয়ে নানান পক্ষ-বিপক্ষ মতামত। সাধারন জনগনের সাথে মাঠ পর্যায়ের কাজের কোন উদাহারন নেই। সাধারন জনগন জানেইনা কে আসছেন কে যাচ্ছেন!
পাঁচ;সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তার পরিবারের অনেকে বাংলাদেশে সরকারী চাকুরীজীবী থাকা সত্তেও এখানে বার্মিংহামে দীর্ঘ তিন/চার বছর থাকলেও পুরো বেতন-ভাতা কিভাবে গ্রহন করেন? এটি গ্রহনের নিয়ম থাকলে আইনটি কি সরকার পুর্ন বিবেচনা করবে? দেশে ফিরে না গেলে পুরো টাকাটা কি সরকার ফেরত চাইতে পারে?
ছয়;যারা ফিরে যাননা তাদের খালি পদ গুলো কিভাবে পুর্ন করা হয়?
সাত:সহকারী হাইকমিশনের অনুষ্টানে কমিউনিটি থেকে কারা আমন্ত্রিত? এর যোগ্যতা কিভাবে নির্নয় করা হয়।প্রত্যেক রাষ্ট্র দুতের আগমে কতিপয় বিশেষ ব্যক্তিরা কিভাবে সুবিঁধা পায়?
আট;স্হানীয় বাংলাদেশী সংগঠন গুলো বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সহকারী হাইকমিশনের অনুধান মেলেনা কেন?
নয়;হাইকমিশনার/সহকারী হাইকমিশনারদের অফিশিয়াল আমন্ত্রণ জানাতে হয়,কিন্তু উওোর অফিশিয়াল আসেনা কেন?
নয়;পুর্ব নির্ধারিত হাইকমিশনার/সহকারী হাইকমিশনার কমিউনিটির কোন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকার কথা থাকলেও তাৎক্ষনিক বাংলাদেশ থেকে আগত এমপি/মন্ত্রীর আগমনে তিনি কি সেটা কেনসেল করতে পারেন?
উল্লেখিত বিষয় গুলো সরকারের নজরে আনার অনুরোধ করছি।ইতিমধ্যেই আমি লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে বিষয়টি ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের কাছে উপস্থাপন করলে তিনি উওর দেন,যারা দেশে ফিরে না,লিস্ট দিলে তিনি তাদেরকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্হা করবেন।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশন গুলো সরকারী প্রতিষ্টান গুলো সুনামের সাথে কাজ করুক।বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুক। উল্টো সরকারের বদনাম না হউক বিদেশে মানব পাচারের এটি একটি অন্যতম মাধ্যম।রাষ্ট্রদুতরা সাধারন জনগনের সাথে একান্ত ভাবে সময় কাটালে জনগন খুশী হয়।ডিপলোমেটিক চলাফেরা সরকার এবং রাষ্ট্রের দুরত্ব তৈরী হয়। গনতন্ত্র শাসন ব্যবসহায় জনগনইতো ক্ষমতার সকল উৎস।বিদেশে কমিউনিটিকে বিভক্ত নয়”সকলের তরে সকলেই আমরা প্রত্যেক আমরা পরের তরে”নিতীই হোক আমাদের পথ চলা।
সাহিদুর রহমান সুহেল
সাংবাদিক এবং কলাম লেখক ।