স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় সংঘাত-নাশকতার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ মে তারিখ রেখেছে আদালত।
ঢাকার পল্টন থানায় দায়ের করা ওই মামলার এজাহার মঙ্গলবার আদালতে জমা পড়লে মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল তা গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আজাদ রহমান জানান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান সোমবার রাতে ওই মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
মামুনুল হকছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন— হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা লোকমান, মাওলানা নাসির উদ্দিন, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, মাজেদুর রহমান, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়্যুবী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাসুদুল করিম, মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী, মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, মাওলানা মুশতাকুন্নবী, মাওলানা হাফেজ মো. জোবায়ের এবং মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৬ মার্চ ঢাকায় পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার এই সফরের বিরোধিতা করে আসছিল হেফজতে ইসলামসহ কয়েকটি সংগঠন ও রাজনৈতিক দল।
সেদিন জুমার নামাজের পর মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসা একদল লোক ভারত ও মোদীবিরোধী নানা স্লোগান দিতে শুরু করলে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়মী লীগ কর্মীদের সঙ্গে তাদের মারামারি বেঁধে যায়।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে ২৬ মার্চ সংঘর্ষের সময় মোটর সাইকেলে আগুন দেয় মোদীবিরোধী মৌলবাদীরা।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে ২৬ মার্চ সংঘর্ষের সময় মোটর সাইকেলে আগুন দেয় মোদীবিরোধী মৌলবাদীরা।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও জল কামান ব্যবহার করে। এ সময় মসজিদের উত্তর গেইটের সামনে রাস্তার পাশে দুটি মোটর সাইকেলে আগুন দেয় মোদীবিরোধীরা। পুলিশের দিকে বৃষ্টির মত ঢিল ছোড়ে তারা।
সংঘর্ষের মধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ, সামাধরণ নাগরি কসহ অন্তত ৬০ জন আহত হন বলে পুলিশের ভাষ্য।
ওই ঘটনায় ৫০০ থেকে ৬০০ জন ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশও একটি মামলা করে সেদিন রাতে।
আরিফুজ্জামানের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, “মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশে দেশি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিচ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, শাবল, রিভলবার নিয়ে সেদিন হামলা চালানো হয়।”
মামুনুল হকের ‘প্রত্যক্ষ হুকুমে’ হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ‘রড দিয়ে আঘাত করলে’ আরিফুজ্জামানের ডান পা ভেঙে যায় এবং পরে অপর দুই যুগ্ম মহাসচিব লোকমান হাকিম এবং নাসির উদ্দিন মনির ‘লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করে’ বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, “মামুনুল হক বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে বসে বৈঠক করে সারা দেশে হামলার পরিকল্পনা করেন। যার ফলশ্রুতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের সাথে জামায়াতে ইসলামী, বিএনপির কর্মীরা ব্যাপক নাশকতা চালায়। তারা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও ভেঙে ফেলে।”
আসামিদের বিরুদ্ধে হাতবোমা নিক্ষেপ, গুলি করা, মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া, দোকানের মালামাল লুট করার অভিযোগও আনা হয়েছে মামলায়।
London Bangla A Force for the community…
