নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
শুরু থেকেই ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করছেন মামুনুল।
কিন্তু মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম নিয়ে বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়।
রিসোর্টকক্ষে স্থানীয়দের জেরার মুখে মামুনুল হক তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা জানান। বলেন, তার শ্বশুরবাড়ি খুলনায়, শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম।
কিন্ত ওই নারী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা বলেন। খুলনা নয়; নিজের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বলে জানান তিনি।
এদিকে রিসোর্টের রুম বুকিংয়ে নথিতে স্ত্রীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা উল্লেখ করেছেন মামুনুল হক। তার স্বাক্ষরসংবলিত সেই নথি আমাদের হাতে এসেছে।
নথিতে দেখা গেছে, মামুনুল হককে উইন্টার প্যাকেজে ফুডসহ আট হাজার টাকায় কক্ষ ভাড়া দিয়েছে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।
রিসোর্টের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বকুল বলেন, অভ্যর্থনার কর্মীরা মামুনুলের কাছে তার সঙ্গিনীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি তার স্ত্রীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা বলেন। সেই নামই লেখা হয়েছে নথিতে। মামুনুল হক ১২ ঘণ্টার জন্য ৫০১ নম্বর কক্ষটি ভাড়া করেন। সেখানে এক ঘণ্টা অবস্থানের পর মামুনুল খাবারের অর্ডার করেন।
প্রশ্ন উঠেছে— রিসোর্টে মামুনুল হকের সঙ্গে অবস্থান করা নারী আমিনা তাইয়্যেবা হলে জান্নাত আরা ঝর্ণা কে?
জানা গেছে, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রীর নাম আমিনা তাইয়্যেবা। তিনি চার সন্তানের জননী।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া মামুনুল হকের সঙ্গে থাকা সেই নারীর (জান্নাত আরা ঝর্ণা) পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. ওলিয়ার রহমান মিয়ার মেজো মেয়ে। ওলিয়ার রহমান কামারগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
ঝর্ণার বাবা ওলিয়ার রহমান ও মা শিরীনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তাদের মেয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণার ৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তার বাড়ি বাগেরহাটের কচুড়িয়া এলাকায়। তাদের আব্দুর রহমান (১৭) ও তামীম (১২) নামে দুজন ছেলেসন্তান রয়েছে। পরে মামুনুল হকের সঙ্গে বিয়ে হয় মামুনুল।
অর্থাৎ রিসোর্টে কক্ষ বুকিংয়ে প্রথম স্ত্রীর নাম লিখেছিলেন মামুনুল হক।