নারী-পুরুষের সমতায় বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৬৫তম। গত বছর ছিল ৫০তম, অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ১৫ ধাপ পিছিয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন ২০২১-এ এ চিত্র উঠে এসেছে। এবারের প্রতিবেদনে ১৫৬টি দেশের মধ্যে নারী-পুরুষের সমতার চিত্র দেখা হয়েছে। প্রতিবেদনে ২০২০ ও ২০০৬ সালের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।
মূলত চারটি প্রধান সূচকের ভিত্তিতে বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ০ থেকে ১০০-এর মধ্যে স্কোর পরিমাপ করা হয়। চারটি সূচকের মধ্যে তিনটি সূচকেই আগের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান বেশ পিছিয়েছে, অর্থাৎ এসব সূচকে দেশে লিঙ্গবৈষম্য বেড়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে স্কোর সমান রয়েছে। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান আগের বছরের প্রতিবেদনের তুলনায় পিছিয়েছে। নারীর অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সুযোগ শীর্ষক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭, ২০২১ সালে ছিল ১৪১। ২০০৬ সালে ছিল ১০৭। শিক্ষায় অংশগ্রহণ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১২১, গত বছর ছিল ১২০, ২০০৬ সালে ছিল ৯৫। স্বাস্থ্য ও আয়ু সূচকে অবস্থান ১৩৪, গত বছর ছিল ১১৯, এ সূচকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৩। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে স্কোর ৭, গত বছরও তা একই ছিল। তবে ২০০৬ সালে এই স্কোর ছিল ১৭।
প্রতিবেদন তৈরিতে চারটি সূচকের অধীনে আবার ১৪টি উপসূচক রয়েছে। উপসূচকগুলোর মধ্যে চারটিতে বাংলাদেশ বিশ্বের সব দেশের ওপরে স্থান পেয়েছে। ক্ষেত্রগুলো হলো ছেলে ও মেয়েশিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তি, মাধ্যমিকে ছেলে ও মেয়েদের সমতা, জন্মের সময় ছেলে ও মেয়েশিশুর সংখ্যাগত সমতা ও সরকারপ্রধান হিসেবে কত সময় ধরে একজন নারী রয়েছেন। তবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ নারী-পুরুষের সমতায় শীর্ষে রয়েছে। বাংলাদেশের পরে আছে নেপাল। নারী-পুরুষের সমতায় দেশটির বৈশ্বিক অবস্থান ১০৬। অন্যদিকে শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ভুটান, ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থান যথাক্রমে ১১৬, ১২৮, ১৩০, ১৪০ ও ১৫৩।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির কারণে নারী-পুরুষের সমতায় ব্যাপক পিছিয়েছে বিশ্ব। আগে ধারণা করা হচ্ছিল, যে সময়ের মধ্যে সমতা অর্জিত হবে, তার চেয়ে ৩৬ বছর পিছিয়ে গেছে বিশ্ব। আগে মনে করা হতো নারী-পুরুষের সমতা আসতে সাড়ে ৯৯ বছর সময় লাগবে। এখন মনে করা হচ্ছে, এই সমতা আসবে ১৩৫ বছর ৬ মাস পর। প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারী-পুরুষের সমতায় শীর্ষে থাকা ১০ দেশ হলো- আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড, সুইডেন, নামিবিয়া, রুয়ান্ডা, লিথুনিয়া, আয়ারল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড। আর সবার পেছনে থাকা ১০ দেশ হলো আফগানিস্তান, ইয়ামেন, ইরাক, পাকিস্তান, সিরিয়া, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইরান, মালি, চাদ ও সৌদি আরব।