তুরস্ক থেকে গ্রিস যাওয়ার পথে মারা যাওয়া সিলেটের এনামুল এহসানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর ড. সৈয়দা ফারহানা নূর চৌধুরী ইউরো-বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তাইজুল ইসলাম ফয়েজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এনামুলের বিষয়টি গ্রিস প্রশাসনকে অবগত করার পর থেকে লাশ পাওয়ার সন্ধান করা হচ্ছিল। রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এনডিসি গ্রিস প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে রীতিমত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গ্রিস প্রশাসন সর্বাত্মক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলেকজান্ডার পলি বর্ডার এরিয়া থেকে হেলিকপ্টারযোগে এনামুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং আলেকজান্ডার পলি নামক হসপিটালে হস্তান্তর করে ।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন থেকে সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার রাজাপুরের আহমদ জায়গীরদারের দ্বিতীয় ছেলে এনামুল এহসান জায়গীরদার ফয়ছল (বোয়ালজুড় বাজারের সাবেক ব্যবসায়ী) তুরস্ক থেকে গ্রিস যাওয়ার পথে ইন্তেকালের খবর বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এনামুলের সাথে থাকা নিকট আত্মীয় ফয়েজ জানান, তারা তুরস্ক বর্ডার অতিক্রম করে গ্রিস বর্ডারে প্রবেশ করলে বরফের মধ্যে এনামুল অজ্ঞান হয়ে যায়। এক পর্যায়ে তার জ্ঞান ফিরে আসে এবং খাবার চায়। পরে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তারা দালালের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এনামুলের মৃতদেহের কয়েকটি ছবি তুলে নেন। দালাল তাদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে লাশটি ফেলে দিয়ে তাদেরকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে আসে।
দূতাবাসের কাউন্সিলর ড. সৈয়দা ফারহানা নূর চৌধুরী জানান, এনামুলের মত অবৈধ পথে আর যেন কোন বাংলাদেশি ইউরোপে পাড়ি না জমায়। বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপের শ্রমবাজার চালু করার। আমরা আশাবাদী খুব শীঘ্রই ইউরোপের শ্রমবাজার চালু হবে। দালালদের খপ্পরে পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর কোনো যুবক প্রাণ হারায় সরকার তা চায় না।
দূতাবাসের প্রথম সচিব ও কাউন্সিলর লেখক সুজন দেবনাথ বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমিনের নির্দেশে রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন এনডিসির দিকনির্দেশনায় গ্রিস প্রশাসন ও দূতাবাস এর সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় এনামুলের লাশ পেতে আমরা সক্ষম হয়েছি। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাংবাদিকবৃন্দ তাদের লেখনির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
গ্রিস জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মুমিন খান বলেন, ইউরোপের অন্যান্য দেশ ও লন্ডনে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ যে ভূমিকা রেখেছেন তা প্রশংসার দাবিদার।
ইউরো-বাংলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, এনামুলের লাশ পেতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি সাংবাদিকবৃন্দ যে ভূমিকা রেখেছেন তা নজির স্থাপন করেছে। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে, আমরা যেন আর অবৈধ পথে ইউরোপে পাড়ি না জমাই। এনামুলের লাশ বাংলাদেশি যুবকদের সতর্কবার্তা দিয়ে গেল। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।
Source: বিডি-প্রতিদিন