ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতাদের একের পর এক বিয়ে বিয়ের সানাই বাজতে শুরু করেছে। গেল রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) অর্নাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার সামিয়াকে বিয়ে করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি।
এবার তার প্যানেলেরই সভাপতি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন। পাত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন আলোচিত সভাপতি ইশরাক জাহান এশা।
গত পরশু মঙ্গলবার এশা ও সোহাগের গায়ে হলুদ হয়েছে। বিয়ে হবে আগামী রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি)। জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের এলডি হল-২ এ তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হবে।
কদিন আগেই গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন সোহাগ ও এশার পরিবারের সদস্যরা। তখন প্রধানমন্ত্রীসহ দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তোলা একটি ছবি সোহাগের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ার করা হয়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে ঢাবির সুফিয়া কামাল হলে এশা এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। মোর্শেদা নামের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রীর রক্তাক্ত পায়ের একটি ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়।
সেই ছবিকে ভিত্তি করে ওই হলের ছাত্রীরা হলের সভাপতি ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে অবরুদ্ধ করে। এরপর এশাকে মারধরের একপর্যায়ে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এশাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী।
ওই রাতেই তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এশাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমকে বিবৃতি দেন।
ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার ঘটনা তদন্তে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কমিটিও গঠন করা হয়। পরে জানা যায় এশার কক্ষের জানালার কাঁচে লাথি মারতে গিয়ে মোর্শেদার পা কেটে গিয়েছিল। কেউ তার পায়ের রগ কাটেনি।
বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হলে ছাত্রলীগ নেতারা এশার সঙ্গে দেখা করেন ও তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। ওই সময় এ ঘটনা নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীও একাধিকবার গণমাধ্যমে কথা বলেন।
এর তিনদিন পর এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ছাত্রলীগ। ঢাবি কর্তৃপক্ষও তার বহিষ্কার আদেশ তুলে নেয়।