ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল মিডিয়া কারচুপির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৭ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ইভিএম সিস্টেমের ওপর জনগণের আস্থা চলে গেছে। আওয়ামী লীগ ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে পরিচালিত কোনও নির্বাচনেই জনগণের কোনও আস্থা নেই। এ কারণেই ভোটের হার এতো কমেছে।’
সিইসি জানিয়েছেন এ নির্বাচনে ৩০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে- এ বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘মিডিয়া এ বিষয়ে অনেক রিপোর্ট করেছে। আমার কাছে সেগুলো আছে। এখানে ৫/৬ অথবা ৭ শতাংশ ভোট পড়তে পারে।’
নির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফলাফল তৈরির জন্য তারা একটা অংক বা অনুপাত মিলিয়েছেন। যেটা তারা প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ পুরোপুরি একটা মিডিয়া কারচুপির মাধ্যমে এ ফলাফল প্রকাশ করেছে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তনে বিশ্বাসী। এবং সে জন্যই আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। ভবিষ্যতে অবস্থার উপরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব, এরপর আমরা কি করবো।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘একটা নতুন কৌশল উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে তারা আবারো ঢাকা সিটি নির্বাচনকে পুরোপুরিভাবে ইচ্ছে মতো তাদের ফলাফল প্রকাশ করল। সাড়ে ৭টা-৮টার কিছুটা সময় ফলাফল প্রকাশ করা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। আমাদের মনে হয়েছে, এক ধরনের মিডিয়া ক্যু সেটা বোধহয় সংঘটিত হয়েছে। আমরা ঠিক জানি না, প্রাথমিক ভাবে যে ফলাফলগুলো কেন্দ্র থেকে দেয়া হয়েছে, এরপর থেকেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণত নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোটগ্রহণ করা, কোন পদ্ধতিতে পদ্ধতিতে তারা ভোটগ্রহণ করবেন সেটা নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সকাল-বেলায় নিজে নৌকায় ভোট দিয়ে তিনি সকলকে নৌকায় ভোট দিতে বলেন। তেমনই নির্বাচন কমিশন কোন পদ্ধতিতে ভোট নেবে না নেবে সেটাও তিনি নির্দেশ করে দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া দেশের কিছুই নড়ে না সুতরাং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বগুলো তাকেই করতে হয়।’
হরতাল প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা যে হরতাল আহ্বান করে ছিলাম, এটা শুধুমাত্র ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে ভোট ডাকাতি ও ইভিএম এর মধ্য দিয়ে যে কারচুপি হয়েছে, শুধু সেইজন্যে না। এই হরতাল ছিল সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং মানুষের মুক্তির জন্য এ হরতাল আহ্বান করেছি। আমরা মনে করি- জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতালে সাড়া দিয়েছে।’