বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ডাকা ২৯ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’তে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসার ঘোষণা দিয়েছে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা। খোদ দলীয় প্রধান বেগম জিয়ার ডাকে যেন আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে তৃণমূল বিএনপি। বাস-ট্রাক-ট্রেন এমনকি পায়ে হেঁটেও তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। যেকোন মূল্যে সমাবেশ সফল করতে তারা বদ্ধ পরিকর।
জাতীয় পতাকা হাতে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ অভিযাত্রা সফল করতে নানামুখী প্রস্তুতি চলছে ১৮ দলের। একদিকে সারা দেশে তৃণমূলে শক্ত অবস্থান ধরে রাখা, অন্যদিকে অভিযাত্রায় দলমত নির্বিশেষে বিপুল মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দুই চ্যালেঞ্জকে জয় করে রোববারের অভিযাত্রায় অন্তত ২০ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চায় বিরোধী জোট।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার উপদেষ্টা শমসের মুবিন চৌধুরী পরিবর্তনকে বলেন, “সরকার জনপ্রিয়তা হারিয়ে দিশেহারা। দেশনেত্রীর মার্চ ফর ডেমোক্রেসিকে বাঁধাগ্রস্থ করতে হীন পন্থা অবলম্বন করছে। কিন্তু এ দেশের গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ সরকারের বাকশাল গঠনের নীল নকশা বাস্তবায়ন হতে দেবে না। রাজপথে নেমে আসবে লক্ষ জনতা। সরকার যতো ষড়যন্ত্রই করুক না কেন রোববারের সমাবেশে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ নিয়ে আমাদের বিশেষ আয়োজন।
ঝিনাইদহ : কর্মসূচি সফল করতে ঝিনাইদহে প্রস্তুতিসভা করেছে জেলা বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের কেপি বসু সড়কে দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মসিউর রহমান বলেছেন, “২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় ‘রোড ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলা থেকে ছয় হাজার নেতাকর্মী যোগ দেবেন।”
এদিকে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’ উপলক্ষে পাবনায় বিএনপি ও জামায়াতের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। কর্মসূচিতে অংশ নিতে জেলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মী আলাদাভাবে ঢাকায় যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পাবনা : পাবনা জেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দরা জানান, বিএনপি থেকে ৫০ থেকে ৫৫টি গাড়ি এবং জামায়াত থেকে ৫০ থেকে ৬০টি গাড়িতে আলাদাভাবে ঢাকায় যাবে নেতাকর্মীরা। সে হিসেবে উভয় সংগঠন থেকে অন্তত পাঁচ থেকে ছয় হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবে। ইতোমধ্যে বেশকিছু নেতাকর্মী ঢাকায় চলে গেছে বলেও দাবি করেছে দলীয় সুত্র।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান তোতা জানান, জেলার ৯টি উপজেলার বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ২৯ তারিখে ঢাকা অভিযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে ১শ’ জন নেতাকর্মীকে ঢাকায় যেতে বলা হয়েছে। জেলা থেকে মোট ৫০ থেকে ৫৫টি গাড়িতে নেতাকর্মীরা ঢাকা যাবেন। গাড়ি না পেলে ট্রেনসহ বিকল্প উপায়ে নেতাকর্মীরা ঢাকার যাবার চেষ্টা করবেন।
তিনি বলেন, “আমাদের হিসেব মতে কমপক্ষে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার নেতাকর্মীকে ঢাকায় যাবেন। ঢাকায় যাবার পর একটি পয়েন্টে নেতাকর্মীরা অবস্থান করবেন। তবে কোন পয়েন্টে তারা থাকবেন তা জানাতে পারেননি তিনি।”
অপরদিকে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা জহুরুল ইসলাম জানান, জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে ঢাকায় যাবার ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা শাখা জামায়াতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোপূর্বে যেভাবে গিয়েছিলাম সেভাবে এবারো আমরা ঢাকায় যাবো।
জেলা বিএনপি রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু বলেন, “কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নানা প্রস্তুতি চলছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কৌশল অবলম্বন করে বহরের বাইরেও রাজনৈতিক কর্মীদেরকে যার যার প্রচেষ্টায় ঢাকার কর্মসূচি সফল করতে নির্দেশনা দেয়া আছে।”
নেতারা জানান, বিরোধী দলীয় নেত্রীর ২৯ তারিখের ঢাকা অভিযাত্রা কর্মসূচি সফল করতে বাস, ট্রাক, ট্রেন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকায় যাবার প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা বিএনপি ও জামায়াত।