ব্রেকিং নিউজ
Home / ব্রিটেন সংবাদ / বার্মিংহাম / মতামত : সেদিন বামিংহাম আওয়ামীলীগ নীরব ছিল কেন?

মতামত : সেদিন বামিংহাম আওয়ামীলীগ নীরব ছিল কেন?

সাহিদুর রহমান সুহেল : আজ বামিংহামের আকাশে দলের চেতনার আতর মাখানো হচ্ছে,সুগন্ধ ছড়ানোর জন্য । একটি সংগঠনের সভাপতি বর্তমান সরকারী দলের সদস্যদের সামনে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষক বলার পর প্রতিবাদ না করায় আজ তাদের পদত্যাগ দাবী করছেন । কিন্তু এইসব নেতারা সেদিন কোথায় ছিলেন মৌলানা আব্দু রহিমকে আওয়ামীলীগের যুক্তরাজ্যর সর্বোচ্চ নীতীনির্ধারক জনাব সামস উদ্দিন খান সাহেব মহান নেতা বলে আখ্যায়িত করলেন? দুর্বলেরা চিরদিন সবলের স্বীকার ! আজ যাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন সেদিন খান সাহেবের বিরুদ্ধে ভয়ে লেজ গুটিয়ে গর্তে ছিলেন কেন? তিনি কি খান সাহেব বলে ?
হায়! বিলেতের রাজনীতি আজ এ কি দেখছি-দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়,দেশের চেয়ে দল বড়,প্রগতিশীলদের চেয়ে একজন বেয়াই বড় ৷রাজনীতিবিদের পথচলা অদূর ভবিষ্যতে দেশ চলবে গণতন্ত্রের বদলে বেয়াই তন্ত্রে ৷
একটু খুলে বলি মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের সকল বার্মিংহামবাসী, যুদ্ধাপরাধী দায়ে অভিযুক্ত চৌধুরী মঈন উদ্দিনের এই ভায়েরা একজন স্বাধীনতা বিরোধী মৌলানার বিরুদ্ধে গণ ধিক্ষার, গণ ঘৃণা ও গণ ক্রোধে বিস্ফোরিত হয়ে কখনো আপোষ করেনি, সেদিন তার মৃত্যুতে ধূমকেতুর মতো হাজির হয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের প্রধান উপদেষ্টা জনাব শামস উদ্দিন খান সাহেব, নিজ দলের সদস্য সহ সকল প্রগতিশীল আন্দোলনকারীদেরকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে সেই মৌলানার জানাজায় উপস্থিত হয়ে মিডিয়ায় বক্তব্য রাখেন যে “.. তিনি একজন মহান নেতা ও মহান ধর্মীয় নেতা”৷অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় নিজের বেয়াই ইসরাইল সাহেবের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজ দল সহ যুক্তরাজ্যের সব প্রগতিশীলদের ভালোবাসা গৌণ করলেন খান সাহেব ৷ আমাদের আগামীতে আরো দ্বায়িত্ব বেড়ে গেলো যুদ্ধাপারাধীর সাথে আওয়ামীলীগের”বেয়াইদের”সাথেও যুদ্ধ করতে হবে ৷
বেশি কিছু বলা ঠিক না, কারণ আমি একা, যুদ্ধাপরাধীর আন্দোলনে প্রথম থেকেই যাদেরকে সঙ্গে পেয়েছিলাম আজ কেউ একটা হাইকমিশনে চাকুরীর আশায়, প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য আবার কেউ বৈদ্যুতিক বাক্সের যোগান দিতে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে কিংবা নিজ স্বার্থের পরিপূরক হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ৷প্রথমে তাদের অন্ধ বীর মদে মেতেছি এবং ঠকেছি প্রতিপদে,দেখেছি সুবিধা নেয় এ কাজ করায়,আমার একক চেষ্টাকে কেবলি ভুল ধরায়!আবার রবার্ট ব্রুসের সাতবার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে অষ্টম বারে বিজয়ী হবার অনুপ্রেরণা আমাকে পথ চলতে শেখায় ৷কারো মৃত্যুর সাথে কিংবা কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্টানের সাথে দুঃসাহকিতা আমার নেই ৷দফায়-দফায় আমিও মৃত্যু গুনছি ৷শামস উদ্দিন খানর সাহেবের এমন বাক্য ব্যাকরণে আমার ব্যাখ্যা “71 সালের রক্ত বরং সস্তা, বেয়াইর বন্ধু দামি”৷
“রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দিবো,তবু এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ”৷শুধু এইটুকু কথা, আর লাখ মানুষ বুকের রক্ত দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলো ৷ একবার ভেবে দেখুন এইটুকু কথার কত ভার, এইটুকু কথার কত গতি, যে লাখো হৃদয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলো, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে গেলো পুরো বাংলা ৷ কিন্তু আজ আমাদের কপাল এতো খারাপ যে, সেই বঙ্গ বন্ধুর আদর্শের লেবাসে একজন স্বাধীনতা বিরোধীকে শামস উদ্দিন খান সাহেব মহান নেতা ও বিশিষ্ট ধর্মীয় নেতা আখ্যায়িত করলেন ৷ আওয়ামীলীগের সকল নেতা সহ সকল প্রগতিশীলরা তিনির কথা মতো এই মহান নেতাকে বিপ্লবী আইকন হিসাবে গ্রহণ করবেন কি? আমি মনে করি শামস উদ্দিন খান সাহেবের আগমন এবং এমন প্রশংসা বার্মিংহামবাসী তথা আওয়ামীলীগের অপমান, প্রগতিশীলদের অপমান, ত্রিশ লক্ষ শহীদের অপমান, সাড়ে চার লক্ষাধিক নির্যাতিত নারীর অপমান ৷ 1992 সাল থেকে বার্মিংহাম প্রগতিশীলদের কাছে এ ইসলামী লেবাসধারী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য ক্ষোভ ছিল, ব্যাথা ছিল, যন্ত্রনা ছিল,
এ ক্ষোভ ও যন্ত্রনা থেকে সময়-অসময় গণ জাগরণ মঞ্চ, সাপোর্ট বাংলাদেশ ও স্পিরিট 71 ব্যানারে স্মলহিত পার্কে এই মৌলানার উস্কানিতে প্রতিপক্ষকে রুখে দেয়া সহ বহুবার সম্মুখ যুদ্ধে অবর্তীণ হয়েছিলো ৷এই সব সংগঠন জামাত অধ্যুষিত এ এলাকার যুদ্ধাপরাধী,রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের কার্য ক্রমে বাধা দিতে কখনো পিছ পা হয়নাই ৷
এখন পর্যন্ত সরকারের ইতিবাচক কাজে আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতা যেমন আছে আবার কোনো ক্ষেত্রে শামস উদ্দিন খান সাহেবের মতো মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের সরকার দলের যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের প্রধান উপদেষ্টার স্বধীনতা বিরোধীদের পক্ষে অবস্থান এমন ভুলভ্রান্তি তাৎক্ষণিক সংশোধনের প্রয়োজন ৷ অতীতে আমরা দেখেছি সময়মতো নিজেদের লোকের ভুলগুলো শোধরানো না হলে অনেক ছোট ভুল ক্রমশ মারাত্মক আকার ধারণ করে ৷ এ ক্ষেত্রে আমরা অতীতের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না ৷
সর্ব শেষে এই টুকু বলতে চাই পেয়ারা পাকিস্তান প্রেমীর মৃত্যুতে বার্মিংহামের ধর্মপ্রাণ সরল মুসলমান ধর্মের নামে পাকিস্তানী রাজনীতি প্রচার ও তার প্রসারের সাময়িক হয়তো মৃত্যু হলো কিন্তু ভয়টা থেকে গেলো খান সাহেবদের কারণে ৷ রক্তস্নাত লড়াইয়ে বার্মিংহামের প্রগতিশীলরা রাজাকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে মনোবল অগ্নিময় বারুদের তেজদীপ্ত ৷বিজয়ী না হয়ে ঘরে না ফেরার অদম্য শপথে বলীয়ান সবাই ৷
সবই আপনারা পারেন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নিজের লোককে কেনটাসা নয়,বরং প্রতিবাদ করুন যারা জাতির জনককে মহান নেতা বলেন আবার ঐ রাজাকারদেরকেও মহান নেতা বলেন ….।