যাদের আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও একটি গর্বিত জাতিসত্ত্বার বির্নিমাণ সম্ভব হয়েছে জাতির সেইসব সূর্যসন্তানদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করলো বৃটেনের বাংলা মিডিয়া। বরাবরের মতো গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে এবারও ব্যতিক্রমী আয়োজনে বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন করলো বিলেতের বাংলা মিডিয়ার প্রধান ও প্রতিনিধিত্বশীল প্লাটফরম লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব। ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সশস্ত্র পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারানো শহীদ স্বজনদের করুণ কাহিনীর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন দুই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের গর্বিত সন্তান।
‘শহীদ পিতার গল্প” শীর্ষক বিশেষ আয়োজনে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের দুই সদস্য যথাক্রমে সাংবাদিক বাবুল হোসেন ও সাংবাদিক আকবর হোসেন তাদের বাবা, ভাই, চাচাসহ প্রিয় স্বজনদের হারানোর হৃদয়বিদারক স্মৃতিকথা বর্ণনার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধকালীন পুরো এলাকার খন্ড চিত্র তোলে ধরার চেষ্টা করেন। তাদের অশ্রুসিক্ত ও আবেগঘন স্মৃতিচারণ পুরো অনুষ্ঠানকে এক অন্যরকম ভাবগাম্ভীর্যে আবিষ্ট করে রাখে। একই সাথে ক্লাবের অপর সদস্য সামসুর রহমান সুমেলের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বাবার অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সিলেটের বালাগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত করতে নেতৃত্বদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল কামাল বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে গেরিলাযুদ্ধসহ রণাঙ্গণে শত্রুবাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে মুখোমুখী হওয়ার নানা লোমহর্ষক কাহিনীর বর্ণনা দেন। তাদের সবার বক্তব্যে দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় অর্ধশত বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও প্রত্যাশিত অনেককিছুর বাস্তবায়ন না হওয়া বিশেষ করে বহুল আলোচিত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকারদের স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত তালিকা প্রস্তুত না করতে পারার ব্যর্থতায় ক্ষোভের প্রকাশ ঘটে। দীর্ঘ অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশেষ আলোচক, মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল কামাল এবং স্মৃতিচারণকারী শহীদ পরিবারের সন্তানদের ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে বরণ করা হয়। তাদের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সেক্রেটারিসহ বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বাড়তি বাগাড়ম্বর ও বক্তাদের আধিক্য না থাকায় এই বিশেষ তিনজনের বক্তব্য উপস্থিত সবাই মনযোগ সহকারে শোনেন ও হৃদয়ঙ্গম করেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নিজস্ব কার্যালয়ে বিজয় দিবসের এই বিশেষ আয়োজন ক্লাব সভাপতি মুহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়েরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক্লাবের সাবেক, বর্তমান নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ সদস্যদের বিপুল উপস্থিতি ঘটে। লন্ডনের বাইরের শহর ওল্ডহাম, লিডস ও বার্মিহাম থেকেও ক্লাবের সদস্যরা এসে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
নিজ এলাকা হানাদারমুক্ত করায় নেতৃত্ব দিতে পেরে সৌভাগ্যবান: মুক্তিযাদ্ধা আজিজুল কামাল
অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক, বালাগঞ্জ পাক-হানদার মুক্ত করায় নেতৃত্বদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল কামাল তাঁর বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত সবাইকে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দেশের একজন সন্তান হিসেবে সেই গুরু-দায়িত্ববোধ থেকে যুদ্ধে জড়াই।
যুদ্ধদিনের কঠিন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, যদি আর ফিরে না আসি তা ভেবে যখন কোনো অপারেশনে যেতাম তখন পুরোপুরি বিদায় নিয়েই যেতাম। এসময় তাঁর কণ্ঠ অনেকটা জড়িয়ে আসে।
বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গেরিলা আক্রমণের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, একদিন পাকবাহিনীর অ্যাম্বুসে পড়ে গিয়ে তারা তাদের হাতে ধরা খেয়ে যান। এসময় সাথী মুক্তিযোদ্ধা মছব্বিরকে পাকবাহিনী বেদড়ক পেটায় তবে আল্লাহর দয়ায় সেদিন প্রাণে বেঁচে যান তারা। তাদেরকে একটি ঘরে আটকে রেখে হানাদার বাহিনী চলে যাওয়ার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সেখান থেকে দরজা ভেঙে কোনো রকমে আমরা বেরুতে সক্ষম হই এবং স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা আমাদের সেল্টার দেন।
বালাগঞ্জ হানাদার মুক্ত করার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত ছিলো ১৪ই আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে অপারেশন করে আমাদের এলাকাকে মুক্ত করবো। কিন্তু বিভিন্ন কারনে তখন তা ব্যর্থ হয়। তবে পরবর্তীতে ভালোভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে ইলাশপুরে পাক-বাহিনীকে অ্যাম্বুস করে হটিয়ে দিতে সক্ষম হই। তা করার পরই বালাগঞ্জ থানার ওসিকে ডেকে এনে বলি, এক্ষুনি আত্মসমর্পন করতে হবে নইলে থানা উড়িয়ে দেবো। অর্ডার শোনার সাথে সাথে ওসি সবাইকে নিয়ে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হন। তাদের আত্মসমর্পনের খবর শোনার এলাকার উৎফুল্ল মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের একনজর দেখতে সেখানে ছুটে আসেন। আমরা থানার সম্মুখে উড়তে থাকা পাকিস্তানী পতাকা নামিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি।
নিজেকে একজন সৌভাগ্যবান মুক্তিযোদ্ধা দাবী করে আজিজুল কামাল বলেন, অনেক সুপরিচিত ও বয়সে বড় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সেদিন বালাগঞ্জ হানাদার মুক্ত করার নেতৃত্ব দেওয়ার গুরু-দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছিলো। স্বাধীনতার পর যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান বলেন, যে আশা নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলাম তার অনেককিছু রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারনে পূরণ হয়নি। তবুও যতুটুকু হয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট আমার তেমন কোনো আফসোস নেই। এক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিক সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পুরনে সবার এগিয়ে আসা দরকার।
বাবার আদর বঞ্চিত হলেও একটি স্বাধীন দেশ ও মানচিত্র পাওয়ার আনন্দই এখন মনের বড় শান্তনা: আকবর হোসেন
প্রথমে শহীদ পরিবারের সন্তান আকবর হোসেন পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শাহাদত বরণকারী তাঁর পিতার করুণ কাহিনী বর্ণনা করেন। পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করা বর্ণনা শুধু তাঁর শহীদ পিতার স্মৃতিচারণেই সীমাবদ্ধ ছিলো না, এসময় তিনি পুরো এলাকারই একটি সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপনের চেষ্টা করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রচিত অমর গীতিকাব্য ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না …” দিয়ে শুরু করেন তিনি। তারপর একে একে তুলে ধরেন পতাদের এলাকা জগন্নাথপুরের রাণীগঞ্জের পুরো চিত্র।
তারিখভিত্তিক পাক-হানাদার বাহিনীর নৃসংশতার চিত্র তুলে ধরে তিনি জানান, বাবা আকলু মিয়ার সাথে তাদের ছোট চাচা ও এক খালুও শহীদ হন। একই দিন তাদের এলাকার বিনোদ রায়সহ আরো অনেকে হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছিলেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মা ফিরোজা বেগমের কাছে লেখা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক চিঠি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার বয়স তখন চার বছর ছিলো তাই সেইদিনের স্মৃতি খুববেশী মনে নেই। মায়ের কাছ থেকে শোনা বাবা আকলু মিয়া শহীদ হওয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বাবা নাকি দেখতে আমার মতোই ছিলেন। আমার বাবা তখন বাজার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রতিদিনের মতো গ্রামের বাড়ি থেকে তিনি রাণীগঞ্জ বাজারে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই তিনি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। একইদিন তার আরেক চাচা ও খালুও শহীদ হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করে আকবর হোসেন জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের পরিবার দুই হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় ভাতা পেতো।
ছোটবেলা বাবার আদর বঞ্চিত হলেও একটি স্বাধীন দেশ, মানচিত্র ও পতাকা পাওয়ার আনন্দই এখন মনের বড় শান্তনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। তবে একটাই দাবী, যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কিংবা গাজী তাদের সঠিক লিস্ট হউক এবং তাদের রাষ্ট্রীয় স্কীকৃতি দেয়া হউক। রাণীগঞ্জের সেতুটি যেন শহীদ-গাজীর নামে নামকরন করা হয় সেই দাবীও জানান তিনি।
অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি পাননি: বাবুল হোসেন
অশ্রুসিক্ত নয়ন ও ভারাক্রান্ত কণ্ঠে পিতা, ভাইসহ পরিবারে সদস্যের শহীদ হওয়ার করুণ কাহিনী তুলে ধরেন বাবুল হোসেন। তিনি বলেন, আমার বাবা একজন ব্যবাসায়ী হলেও রাজনীতি সচেতন ছিলেন। বাবা মাকে প্রায়ই বলতেন, এমন এক জালিমের হাতে পড়লাম যে, সালাম করলে মারে না করলেও মারে। ভাইয়েরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বড় ভাই আলতাফ মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ট্রেনিং নিয়ে বেইল্যা পাড়া থেকে যদ্ধু শুরু করেন।
বাবার উৎসাহেই তাঁর বড় ভাই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাদের পরিবার ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়। ভারতে যাওয়ার সময় ভাইয়ের হাতে জায়নাজ, তসবিহ, ওয়াজিফা তুলে দিয়ে বাবা বলেছিলেন, সাবধানে থেকো এবং নামাজ পড়ো।
বাবা শহীদ হওয়ার দিনের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, বাইরে থেকে ঘরে এসে মাকে ভাত প্রস্তুত করার কথা বলে নামাজ পড়তে যাবেন এমন সময় স্থানীয় বাজার থেকে কয়েকজন পাকবাহিনীর দোসর রাজাকাররা এসে তাঁর বাবাকে বলে যে, তাড়াতাড়ি খেয়ে এসো মাঠে খেলা করবো। স্থানীয় কয়েকজন চিহ্নিত রাজাকারের নামোল্লেখ করে তিনি বলেন, বাবা নামাজে থাকতেই আমার ভাইকে মারার আওয়াজ আমাদের কানে ভেসে আসে এবং পরক্ষণেই হানাদার বাহিনী আমাদের বাড়িতে ছুটে আসে এবং আমার ভাই পাশের ডাকবাংলায় পরোটা খাচ্ছেন বলে বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা আমাদের ঘরের সবাইকে তুলে নিতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমার মা ও নানাী তাদের নানাভাবে আকুতি-মিনতি করে প্রাণে বাঁচেন এবং আমাদের নিয়ে অন্যত্র চলে যান।
তিনি আরো বলেন, বাবা ও এক ভাই শহীদ হওয়ার পর বড় ভাইকে অনেকে মুক্তিযুদ্ধে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু কারো কথায় কর্ণপাত না করে আমাদের বড় ভাই আলতাফ আমাদের রেখেই ছুটে যান যুদ্ধে। তিনি আগরতলা যাওয়ার পর আর ফিরেনি বলেই কান্নায় কণ্ঠ জড়ায়ে যায় বাবুল হোসেনের।
দেশ স্বাধীন হবার অনেক পর তাদের পরিবারের ফিরে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বড় ভাই বঙ্গবন্ধুকে নানা বলে ডাকতেন। আমার ভাই বঙ্গবন্ধুকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, নানাভাই যুদ্ধাপরাধী কাউকে ছাড় দেবেন না। সাধারণ ক্ষমাপ্রাপ্তরাই পরবর্তীতে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে। বাবুল হোসেন বলেন, তারাই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যার জন্য দায়ী।
মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শ্রেণীবিন্যাস করে ভিআইপিসহ নানা স্তর করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেখা যায় অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি পাননি। প্রকৃতি মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি আদায়ে ব্যর্থতার সমালোচনা করার পাশাপাশি তিনি সুষ্ঠু রাজাকারদের তালিকা প্রণয়নেরও দাবী জানান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক, ক্লাব সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়ের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী ও জীবিত সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সবার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এধরণের অনুষ্ঠান নতুন নয়, অতীতেও ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে বিজয় ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব।
স্বাগত বক্তব্যে ক্লাব সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গর্বিত সন্তানদের মুখে প্রিয় স্বজন হারানোর শোকাবহ স্মৃতিচারন শোনার আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। তিনি সম্প্রতি প্রকাশিত বহুল আলোচিত রাজাকারদের তালিকায় অনেক স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকাকে চরম অপমানজনক মন্তব্য করে এই দুর্ঘটনার নিন্দা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ক্লাবের সিনিয়র সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দুই শহীদ পরিবারের সন্তানের স্মৃতিচারণকে চমৎকার গল্প হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
ক্লাবের সহ-সভাপতি ব্যরিস্টার তারেক চৌধুরী সমাপনী বক্তব্যে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্œ নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন সেই স্বপ্ন ও তাদের যথাযথ সম্মান প্রতিষ্ঠিত হউক, প্রত্যাশিত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হউক।
উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়ন ও মিষ্টিমুখের মাধ্যমে বিজয় দিবসের বিশেষ এই আয়োজন সমাপ্ত হয়।