গত সপ্তাহে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন-জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করার কারণেই বিরোধীদল কিছু করতে পারছে না। অন্যথায়-তারা আমাদেরকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতো। তার এই বক্তব্যের মাত্র এক সপ্তাহ পরই বিনাভোটের এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর মুখোশ উম্মোচন করে দিলেন আরেক বিনাভোটে নির্বাচিত এমপি রাশেদ খান মেনন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন শনিবার বরিশালে এক সভায় বলেছেন-আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, গত নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীসহ আমাদের কাউকেই জনগণ ভোট দেয়নি।
মেননের এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই এনিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে চায়ের দোকানেও আজ শুধু আলোচনার মূল বিষয় এটিই। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেতো এনিয়ে ব্যপক ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
সাধারন মানুষের আলোচনায় প্রধানত দুইটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে।
প্রথমত: গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটডাকাতির পর থেকেই শেখ হাসিনা জোর গলায় মিথ্যাচার করে আসছেন যে, জনগণ তাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তারা জোর করে ক্ষমতায় আসেনি। অথচ, নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত যতগুলো সংস্থা জরিপ করেছে সবার প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে ভয়াবহ ভোটডাকাতির চিত্র। আর ডাকাতি করতে গিয়ে অনেক জায়গায় শতভাগ ভোটও দেয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা এসব স্বীকারও করেছেন। কিন্তু, শেখ হাসিনা এসবকে কোনোভাবেই আমলে নিচ্ছেন না। তবে, বিনাভোটের এমপি রাশেদ খান মেনন আজ শেখ হাসিনার মুখোশ উম্মোচন করে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার যদি ন্যূনতম লজ্জা থাকে তাহলে আর কোনো দিন বলবে না যে জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি।
দ্বিতীয়ত: রাশেদ খান মেনন শেখ হাসিনার বর্তমান অবৈধ সংসদের একজন এমপি। আ্ইনের দৃষ্টিতে তার দেয়া বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সংসদের একজন এমপি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, গত নির্বাচনে জনগণ তাদেরকে ভোট দেয়নি। এই কথার অর্থ হলো-তারা জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত এমপি নন।
সংসদ গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রের সংবিধান বলছে-একক নির্বাচনী এলাকা সমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইননুযায়ী নির্বাচিত তিন শত সদস্য লইয়া এই সংসদ গঠিত হইবে।
এখন, রাশেদ খান মেননের বক্তব্য থেকে বলা যায় সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সংসদ গঠিত হয়নি।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেউ যদি এখন আদালতে রিট করে তাহলে এই সংসদ আর টিকবে না। নির্বাচনে যে ভোটডাকাতি হয়েছে সেই তথ্য প্রমাণ আর আদালতে পেশ করতে হবে না। কারণ, এই সংসদের একজন এমপি প্রকাশ্যে সমাবেশে সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, গত নির্বাচনে জনগণ তাদেরকে ভোট দেয়নি। বর্তমান সংসদকে অবৈধ ঘোষণার জন্য শুধু তার এই বক্তব্যই যথেষ্ট।