মাত্র ৫ বছরের বৃটিশ বাংলাদেশী এই শিশুর জীবন-মরন ইস্যুতে পরিবারের পক্ষে এসেছে কোর্টের রায় । এখন আর তার লাইফ সাপোর্ট মেশিন খুলতে পারবেনা-রয়েল লন্ডন হসপিটাল। জানালেন মা সলিসিটার সেলিনা রাকিব। শুধু তাই নয় তাফিদার সাথে সেই লাইফ সাপোর্ট মেশিন নিয়েই মঙ্গলবার দুপুরে ইটালির পথে এয়ার এম্বুল্যান্স যোগে রওয়ান করলেন মা-বাব।
এর আগে সোমবার লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ও কমিউনিটি মতবিনিময়ে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন। বল্লেন, শুরুর দিকে রয়েল লন্ডন হসপিটাল বলেছিলো-তাফিতা হাতেগুনা কিছুদিন বাচবে। তাই তারা লাইফ মেশিন খুলে ফেলবে। তবে এখন বলছে ভিন্ন কথা । বলছে ২০/৩০ বছর বেচে থাকবে সে। সংবাদ সম্মেলনের জানানো হয়, তাফিদার পরিস্থিতিও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ইটালির হাসপাতালে প্রায় ৭ মাস চিকিতসা শেষে বহুলাংশে সুস্থ হয়ে উঠার আশাবাদ সবার।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব হলে ক্লাব সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়েরের পরিচালনায় এতে তাফিদার বাবা কন্সট্রাকশন কনসাটেন্ট মো রাকিব, চ্যানেল এসের ফাউন্ডার মাহি ফেরদৌস জলিল, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের চেয়ার ব্যারিস্টার আতাউর রহমানসহ বিশিষ্টজন অংশ নেন। মিডিয়া প্রতিনিধি ছাড়াও সামগ্রিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বক্তৃাত করেন, জিএসসি ভাইস চেয়ার মির্জা আসহাব বেগ, বাংলাদেশ ক্যাটারাস এসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট এ এ মুনিম, ইউকে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বারের সিনিয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহিব চৌধুরী ও চ্যানেল এস এর হেড অব প্রোগ্রামস ফারহান মাসুদ খান, বিয়ানীবাজার ক্যান্সার হাসপিটালের ডিরেক্টর আবদুল শফিকসহ আরো অনেকে। তাতক্ষনিক ভাবে অনেকে আর্থিক সহযোগিতা এবং অর্থ কালেকশনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে চ্যানেল এস ফাউন্ডার ঘোষনা দেন শিঘ্রই জিএসসি-র চ্যারিটির মাধ্যমে তাফিদাকে বাচাতে চ্যানেল এসে লাইভ ফান্ডরেইজ করা হবে।
মাহি জলিল বলেন, আমরা সব সময় মানবিক বিষয়ে অগ্রসর থাকার চেষ্টা করি। অন্য সব মিডিয়াও সামগ্রিক ভবে সমাজের জন্য কাজ করছেন। তবে চ্যানেল এস তাফিদার পাশে থাকছে একেবারে হদ্রয় থেকে, এখানে কোনো ধরনের ফি বা খরচ থাকবে না। মেইনস্ট্রিমেস সবাই যেহেতু সহযোগিতা করছে, আমরা কমিউনিটি হিসেবে একটু পাশে থাকা দরকার। তাফিদার মা-বাবা তো কারো কাছে হাত পাতবেন না। তারা হয়তো লোন কওে রিমর্গে করে নিজের প্রিয় সন্তানকে বাচাতে চেষ্টা করছেন। এছাড়া কোনো সম্পদশালী পরিবারেও একসাথে ৩/৪শ হাজার পাউন্ড খরচ করার মতো অবস্থা থাকে না। তাই-আসুন পাশে দাড়াই। বাদবাকী আল্লাহ করবেন।
বক্তারা বলেন, শুধু ফান্ডরেইজিং নয়, একজন মা যে সাহস করে প্রতিবাদ করেছেন, আইনি লড়াই করেছেন, জয়ী হয়েছেন, সেটি এক ইতিহাস। আমরা এই পরিবারকে ধন্যাবদ জানাই। এছাড়া এই অর্জনের মাধ্যমে কমিউনিটিকে নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে আরো সচেতন হতে পারে।
তাফিদার মা সেলিনা জানালেন, লন্ডনের কিউসি ব্যারিস্টাররা তাফিদার মানবিক অবস্থান এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রায় ৮০ হাজার পাউন্ড ডিসকান্ট দিয়ে কাজ করেছেন। লাইফ সাপোর্ট মেশিন না খুলেই তাফিদাকে নিয়ে ইটালিতে যাওয়ার আইগত অধিকার তিনি পেয়েছেন। তবে খরচ বিশাল। প্রায় আড়াইশ হাজার পাউন্ড। পারিবারিক ভাইে যতোটুক সম্ভব ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা। আর গো ফান্ড মি ডটকমের মাধ্যমে ফান্ডরেইজ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী কমিউনিটির আারো বেশী সহযোগিতা আশা করা হচ্ছে। লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দা মোনা তাসনিম, ইস্ট লন্ডন মসজিদের প্রধান ইমাম খায়েক আবদুল কাইয়ুম এবং প্রখ্যাত বৃটিশ আলেম হাইতাম হাদ্দাদও তাফিদার সাথে দেখা করেছেন, সমর্থনের অনুরোধ জানিয়েছেন।