ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / যুক্তরাজ্যে কার্গো অবতরণে নিষেধাজ্ঞায় সংকটে দেশের বাণিজ্য

যুক্তরাজ্যে কার্গো অবতরণে নিষেধাজ্ঞায় সংকটে দেশের বাণিজ্য

১২ মার্চ, ২০১৬: বাংলাদেশের পণ্যবাহী কার্গো বিমান সরাসরি যুক্তরাজ্যে অবতরণে নিষেধাজ্ঞায় সংকটে পড়েছে দেশের বাণিজ্য। আর এর প্রভাব যাত্রীবাহী বিমানেও পড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

যুক্তরাজ্য বিমানে যাওয়া যাত্রীদের যাঁরা টিকেট কাটেন তাঁদের সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) বলছে, এরই মধ্যে যাত্রীরা যুক্তরাজ্য যাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় ব্রিটিশ এভিয়েশনের তদন্ত দলের সন্তুষ্টির কথা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছিলেন সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল সানাউল হক। তিনি  বলেছিলেন, ‘ব্রিটিশ এভিয়েশনের তদন্ত দল আমাদের বলেছেন এতদ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ অন্য কোনো দেশ করতে পারেনি।’

কিন্তু এর ১৮  দিন পর যুক্তরাজ্য জানায়, তারা সন্তুষ্ট নয়। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার কথা গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, এর প্রভাব বাণিজ্যের পাশাপাশি পড়তে পারে অন্য এয়ারলাইনসগুলোতেও।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুর অলম বলেন, ‘এ নিষেধাজ্ঞা যে শুধু কার্গোর ওপর প্রভাব ফেলছে, তা নয়,। এটি আগামীতে যাত্রীবাহী বিমানের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এ জন্য সরকারের উচিত বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা।’

আটাব বলছে, ইউরোপের মধ্যে লন্ডন রুটেই যাত্রীদের প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ বিমান। পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা কারণে যাত্রীরা সরাসরি যাওয়ার ক্ষেত্রে সংশয় প্রকাশ করছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) নেতা কাজী এম এ করিম বেলাল বলেন, ‘যাত্রীদের মধ্যে অনেক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীরা যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে কি না তা নিয়ে শংশয় প্রকাশ করছে।

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে যে আমাদের কার্গো বিমান সরাসরি যেতে পারবে না, এটা কিন্তু আমাদের ইমেজের জন্য বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়াবে। গত বছর যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সেখানে চলতি বছর আমাদের প্রত্যাশা সাড়ে ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য যাবে।’

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয়টিকে জানানোর জন্য যুক্তরাজ্য নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই রকম যদি চলতে থাকে তাহলে ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ কোটি ডলারে যাওয়া তো দূরে থাক, বিদ্যমান বাজার ধরে রাখাই তো কঠিন হয়ে যাবে।’

সমস্যা নিরসনে দুই দেশের মধ্যে অলোচনা এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের বোধগম্য হয়নি। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী নিরাপত্তার ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছি। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে যে ব্যাপোরে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি আশা করি ৩১ মার্চের আগেই সুরাহা হয়ে যাবে।’

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ইরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের কার্গো বিমান অবতরণে নিষেধাজ্ঞার সময় আরো বাড়লে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমাদের বেশির ভাগ পণ্য কার্গো বিমানে যুক্তরাজ্য যায়। তবে শিগগিরই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে বলে আশা করছি।’