ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / এটিএম আজহারুল ইসলামের ফাঁসির আদেশ ; বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল

এটিএম আজহারুল ইসলামের ফাঁসির আদেশ ; বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল

ATM-Azhar৩০ ডিসেম্বর ২০১৪: একাত্তরে সংঘটিত নির্যাতন, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

তার বিরুদ্ধে আনীত ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টিই প্রমাণিত হয়েছে। কেবল প্রথম অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়েছে। ৫ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর এবং ৬ নম্বর অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে  আজহারকে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে কাঠগড়ায় ওঠানো হয়। সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে তাকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। এরপর সকাল ১১টা ১০ মিনিটে চেয়ারম্যান বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে বিচারকগণ এজলাসে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করেন। সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে ১৫৮ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় পড়তে শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর কনিষ্ঠ বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন শেষে আজহারের বিরুদ্ধে যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে মর্মে মামলাটি সিএভিতে রেখে দেয় ট্রাইব্যুনাল।

রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, সৈয়দ হায়দার আলী, জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ, মোখলেসুর রহমান বাদল, তুরিন আফরোজ প্রমুখ। অপরদিকে আসামীর পক্ষে মো. তাজুল ইসলাম, শিশির মোহাম্মদ মুনির উপস্থিত ছিলেন।

আসামীপক্ষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন আজহারের আইনজীবী। এর আগে ১৮ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত আজহারের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে আজহারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে সর্বমোট ১৯ জন প্রসিকিউশনের সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন।

একই বছরের ১২ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

এসব অভিযোগের তদন্তকালে ৬০ জনেরও বেশী ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ মামলাটি তদন্ত করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা (আইও) এসএম ইদ্রিস আলী।

প্রসিকিউশনের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্তের স্বার্থে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আজহারকে সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই আজহারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।

৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল র্চার্জ) দাখিল করা হয়েছে। মোট ৪টি ভলিয়মে ৩শ’ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করা হয়।

এর আগে গত বছরের ৪ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের ৯ ধরনের অভিযোগে তদন্ত শেষ করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশন বরাবর তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে।

জামায়াত নেতা এটিএম আজহার রংপুর অঞ্চলে ১২শ’ ২৫ ব্যক্তিকে গণহত্যা, ৪ জনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও ১৩ জনকে নির্যাতন করা এবং শতশত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের আদেশে রাজধানীর মগবাজারের নিজ বাসা থেকে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আজহারকে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল

এদিকে, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আজ  আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজাহারুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রতিবাদে বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতালের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।